বিএসএমএমইউতে রেসিডেন্সি ইনডাকশন প্রোগ্রাম ২০২৫ অনুষ্ঠিত
জাতীয় প্রয়োজনের দিকে লক্ষ্য রেখে বিশেষজ্ঞ তৈরি করতে হবে: অধ্যাপক ডা. মোঃ সায়েদুর রহমান
গবেষণার মাধ্যমে রেসিডেন্টদের নোবেল জয়ের সুযোগ রয়েছে, গুরুত্ব দিতে হবে
এভিডেন্স বেইসড চিকিৎসাবিদ্যায়: অধ্যাপক ডা. মোঃ শাহিনুল আলম
বিএসএমএমইউতে উচ্চতর চিকিৎসা শিক্ষায় ডিগ্রি অর্জণে লক্ষ্যে অধ্যয়নরত নবাগত রেডিডেন্ট চিকিৎসক-শিক্ষার্থীদের শপথ অনুষ্ঠান রেসিডেন্সি ইনডাকশন প্রোগ্রাম ২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিএসএমএমইউর শহীদ আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে আজ বৃহস্পতিবার ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ইং তারিখে অনুষ্ঠিত এই ইনডাকশন প্রোগ্রামে প্রধান অতিথি ছিলেন মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) অধ্যাপক ডা. মোঃ সায়েদুর রহমান। রেসিডেন্সি ইনডাকশন প্রোগ্রামে সভাপতিত্ব করেন ও নবাগত রেসিডেন্টদের শপথ বাক্য পাঠ করান মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শাহিনুল আলম। মোট ১২৩৮ জন রেসিডেন্ট শপথ অনুষ্ঠানে অংশ নেন। এর মধ্যে রয়েছে সার্জারি অনুষদে ৫৩৭ জন, মেডিসিন অনুষদে ৩৭৫ জন, শিশু অনুষদে ১১৫ জন, বেসিক সাইন্স ও প্যারাক্লিনিক্যাল সাইন্স অনুষদে ১৩০ জন এবং ডেন্টাল অনুষদে ৮১ জন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান বলেন, জাতীয় প্রয়োজনে দিকে লক্ষ্য রেখে চিকিৎসা পেশায় বিশেষজ্ঞ তৈরি করতে হবে। নবাগত রেসিডেন্টদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, চিকিৎসা শিক্ষায় জ্ঞান অর্জন ও চিকিৎসা সেবা দক্ষতা অর্জনের সাথে সাথে বাংলাদেশের যেকোনো হাসপাতাল ও মেডিক্যাল প্রতিষ্ঠানে বিদ্যমান সুযোগ সুবিধার মধ্যেই অর্জিত জ্ঞান ও দক্ষতা প্রয়োগের সামর্থ্য অর্জন করতে হবে। নবগত রেসিডেন্টদের চিকিৎসা পেশার নীতি নৈতিকতা ধারণ করতে হবে এবং রোগীদের অসন্তুষ্টি দূর করার দিকেও গুরুত্ব দিতে হবে। বর্তমান সময়ে যোগাযোগ বিষয়ে দক্ষতা বৃদ্ধি, লিডারশীপ ও টিম ম্যানেজমেন্ট এর গুণাবলী অর্জন করা, এ.আই সম্পর্কে দক্ষতা অর্জন করা, নতুন নতুন টেকনোলজির সাথে নিজেকে যুক্ত করা এখন সময়েরই দাবি, যা রেসিডেন্টদেরকে শিখতে হবে, অর্জন করতে হবে। আমার ও আমিত্বকে ভুলে গিয়ে অর্জিত জ্ঞানকে নিজের মধ্যে না রেখে বিশ্বকল্যাণে ছড়িয়ে দিতে হবে। তিনি বলেন, মানুষের সুস্বাস্থ্যের সাথে সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ, পৃথিবীর সকল দেশ, সকল প্রাণী, পরিবেশ, পানি, বাতাস, খাদ্যসহ সমগ্র পৃথিবী যুক্ত। তাই মানুষের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে হলে নিরাপদ পানি, নিরাপদ খাদ্য, বিশুদ্ধ বায়ূ, পর্যাপ্ত অক্সিজেন অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে, তাই এই সব বিষয়েও পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকা আবশ্যক।
মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শাহিনুল আলম বলেন, চিকিৎসা পেশায় এভিডেন্স বেইসড ট্রিটমেন্ট বা প্রমাণভিত্তিক চিকিৎসাবিদ্যা বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে জ্ঞানের গভীরে প্রবেশ করে এভিডেন্স বেইসড চিকিৎসাবিদ্যা কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে হবে। বর্তমান সময়ে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের পারস্পরিক অংশগ্রহণ ও মূল্যায়নও অতীব গুরুত্বপূর্ণ। উচ্চতর চিকিৎসা শিক্ষার মাধ্যমে জনগণের আকাঙ্খা পূরণ করতে হবে। নিজেদেরকে থিসিস ও গবেষণায় যুক্ত করে নতুন নতুন উদ্ভাবনী জ্ঞানের আলোর দুয়ার খুলে দিতে হবে। আজকের রেসিডেন্টদের মাঝেই রয়েছে সুপ্ত জ্ঞান ও বিজ্ঞানের অফুরন্ত ভান্ডার। এটাকে কাজে লাগিয়ে গবেষণার মাধ্যমে রেসিডেন্টদের চিকিৎসা বিষয়ে নোবেলের মতো বিশ্বখ্যাত পুরস্কার অর্জন করা সম্ভব।
অন্য বক্তারা বলেন, শেখার প্রতি আজীবন আগ্রহ থাকতে হবে। শুধু ভালো চিকিৎসক হলেই চলবে না, ভাল মানুষও হতে হবে। অর্জিত জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে চিকিৎসাসেবা, চিকিৎসা শিক্ষা ও গবেষণা ক্ষেত্রে এই দেশকে বিশ্বমানে নিয়ে যেতে হবে।
ইনডাকশন প্রোগ্রাম সঞ্চালনা করেন বিএসএমএমইউর রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মোঃ নজরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন সম্মানিত উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মোঃ আবুল কালাম আজাদ, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোঃ মুজিবুর রহমান হাওলাদার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার, প্রক্টর ডা. শেখ ফরহাদ। নিজ নিজ অনুষদের নবাগত রেসিডেন্ট শিক্ষার্থীদের পরিচয় করিয়ে দেন সার্জারি অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. মোঃ রুহুল আমিন, বেসিক সায়েন্স ও প্যারা ক্লিনিক্যাল সায়েন্স অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. সাইফ উল্লাহ মুন্সী, মেডিসিন অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. মোঃ শামীম আহমেদ, শিশু অনুষদের ডীন অধ্যাপক ডা. মোঃ আতিয়ার রহমান, ডেন্টাল অনুষদের কোর্স ডাইরেক্টর অধ্যাপক ডা. মোঃ মাসুদুর রহমান। এছাড়াও মেডিক্যাল টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সফি উদ্দিন সহ অধিভুক্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষগণ, নবাগত রেসিডেন্টগণ বক্তব্য রাখেন।
সম্পাদনা: সাইফুল আজম রঞ্জু, ছবি: আরিফ খান, নিউজ: প্রশান্ত মজুমদার।