বিএমইউকে সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে সহায়তা দিতে
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাথে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর
বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএমইউ) ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এর মধ্যে আজ বুধবার ২২ অক্টোবর ২০২৫ইং তারিখে বিএমইউর মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর মহোদয়ের কার্যালয়ে একটি সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে। বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে স্বাক্ষর করেন মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মোঃ শাহিনুল আলম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষে স্বাক্ষর করেন সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ডা. আহমেদ জামশেদ মোহাম্মদ। এই স্বাক্ষরের ফলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিএমইউ এর ইনফেকশন প্রিভেনশন ও কন্ট্রোল এর জন্য বা সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় টেকনিক্যাল সাপোর্ট দিবে। এই চুক্তির লক্ষ্য হলো একটি মাল্টিমোডাল ইনফেকশন প্রিভেনশন ও কন্ট্রোল (আইপিসি) কৌশল বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কিত সংক্রমণ হ্রাস করা এবং রোগী ও স্বাস্থ্য কর্মীদের নিরাপত্তা উন্নত করা। এই চুক্তির সামগ্রিক উদ্দেশ্য হলো স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কিত সংক্রমণ হ্রাস করার জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাথে প্রযুক্তিগত সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিষ্টেমের মধ্যে সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ অনুশীলনগুলিকে শক্তিশালী করা। বিশেষ করে কারিগরী সহায়তা প্রদান, সক্ষমতা বৃদ্ধি ও প্রশিক্ষণ, পর্যবেক্ষণ, মূল্যয়ন, জ্ঞান ভাগাভাগি, প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধি, তদারকি ইত্যাদিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সহায়তা দিবে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বিএমইউ এর মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মোঃ শাহিনুল আলম বলেন, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত সচেতন এবং কার্যকরী পদক্ষেপ নিয়েছে। সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে বিএমইউর একটি উচ্চ পর্যায়ে কমিটি রয়েছে, বিএমইউর বার্ষিক বাজেটে আলাদভাবে বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে বিএমইউর শুধু এই বিশ্ববিদ্যালয়েই নয়; বরং দেশব্যাপী এই কার্যক্রমে একটি মডেল প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করতে প্রস্তুত। বর্তমানে বিএমইউ স্বাস্থ্যখাতে বিশেষ করে উচ্চতর মেডিক্যাল শিক্ষার গুণগত পরিবর্তনে অসামান্য অবদান রাখছে। ক্যান্সার চিকিৎসা, প্রতিস্থাপন চিকিৎসা কার্যক্রম, এনআইসিইউ সেবাসহ সামগ্রিক চিকিৎসাসেবায় বিরাট উন্নতি লাভ করছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পক্ষ থেকে দেয় সম্ভাব্য সকল সুযোগ সুবিধা বিএমইউকে দিলে এই বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা শিক্ষা, চিকিৎসাসেবা ও গবেষণায় আরো এগিয়ে যাবে।
অনুষ্ঠানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ডা. আহমেদ জামশেদ মোহাম্মদ বলেন, বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়কে সংক্রমণ প্রতিরোধ নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হবে। একই সাথে সেবার গুণগতমান বৃদ্ধিসহ বিএমইউকে সেন্টার ও অফ এক্সিলেন্স প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিদ্যমান সুযোগ সুবিধাসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানেও সংস্থাটি আগ্রহী বলে তিনি উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এই চুক্তির ফলে সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণে সহায়তা পাওয়া, বিশ্বব্যাপী ইনফেকশন প্রিভেনশন ও কন্ট্রোল মানদন্ডের সাথে সামঞ্জ্যপূর্ণ অভিজ্ঞতা লাভ করাসহ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফেকশন প্রিভেনশন ও কন্ট্রোল কার্যক্রমকে মডেল হিসেবে উন্নীত করা সম্ভব হবে এবং এই মডেল দেশের অন্যান্য মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালসহ স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলিতেও অনুসরণযোগ্য হবে। অন্যকথায় বিএমইউ সংক্রমণ ও প্রতিরোধ নিয়ন্ত্রণে দেশব্যাপী নেতৃত্ব দিবে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বিএমইউর সম্মানিত প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) ও ইনফেকশন কন্ট্রোল কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোঃ আবুল কালাম আজাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোঃ মুজিবুর রহমান হাওলাদার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার, বেসিক সাইন্স ও প্যারাক্লিনিক্যাল সাইন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. সাইফ উল্লাহ মুন্সী, প্রিভেনটিভ এন্ড স্যোসাল মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোঃ আতিকুল হক, ডেন্টাল অনুষদের ডিন ডা. সাখাওয়াত হোসেন, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মোঃ নজরুল ইসলাম, পরিচালক হাসপাতাল ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু নোমান মোহাম্মদ মোছলেহ উদ্দীন, ইনফেকশন কন্ট্রোল কমিটির সদস্য সচিব ডা. কাজী আলী আফতাব প্রমুখসহ আইপিসি কোর কমিটির সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সম্পাদনা: ডা. সাইফুল আজম রঞ্জু। ছবি: মোঃ আরিফ খান। নিউজ: প্রশান্ত মজুমদার।