বহির্বিভাগকে উৎকৃষ্ট  সেবার মডেল হিসেবে গড়ে তুলতে হবে: অধ্যাপক ডা. মোঃ শাহিনুল আলম

বহির্বিভাগকে উৎকৃষ্ট সেবার মডেল হিসেবে গড়ে তুলতে হবে: অধ্যাপক ডা. মোঃ শাহিনুল আলম

20 Aug, 2025 12:00 PM - 20 Aug, 2025 02:00 PM |

বিএমইউ’র বহির্বিভাগ সেবার উন্নয়ন ও রোগী বান্ধব করার লক্ষ্যে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
বহির্বিভাগকে উৎকৃষ্ট চিকিৎসাসেবার মডেল হিসেবে গড়ে তুলতে হবে: অধ্যাপক ডা. মোঃ শাহিনুল আলম
বাংলাদেশ মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি (বিএমইউ) এর মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মোঃ শাহিনুল আলম বলেছেন, সকল কর্মচারী, কর্মকর্তা ও মেডিকেল অফিসাররা বাংলাদেশ মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি (বিএমইউ) এর ওপিডি বা বহির্বিভাগ সেবার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। সহযোগিতা এবং পেশাদারিত্বের মাধ্যমে কার্যকর, সহানুভূতিশীল ও রোগী-কেন্দ্রিক সেবা নিশ্চিত করতে হবে। সংশ্লিষ্ট সকলকে একসাথে কাজ করে ওপিডিকে উৎকৃষ্ট চিকিৎসাসেবার মডেল হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। আজ ২০ আগস্ট ২০২৫ইং তারিখে বাংলাদেশ মেডিকেল ইউনিভার্সিটির (বিএমইউ) এর এ ব্লক অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বহির্বিভাগ (ওপিডি) কার্যক্রমের ওপর ‘বিশ্বমানের স্বাস্থ্যসেবা: বর্তমান ও করনীয়’ শীর্ষক উপস্থাপনায় তিনি এ কথা বলেন। বিএমইউ এর বহির্বিভাগ সেবাকে আরো উন্নত ও রোগী বান্ধব করার লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে মতবিনময় এর বহির্বিভাগ-১ এবং ২ এ কর্মরত সকল মেডিক্যাল অফিসার, কর্মকর্তা, সিনিয়র স্টাফ নার্সং, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী, অউটসোর্সিং কর্মচারীগণের সাথে এই মতবিনিময় সেবার আয়োজন করা হয়।
মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মোঃ শাহিনুল আলম তাঁর উপস্থাপনায় উল্লেখ করেন, বিএমইউ ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এবং এটি দেশের প্রথম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিএমইউ দেশে স্নাতকোত্তর চিকিৎসা শিক্ষার মান উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির মূল লক্ষ্য হলো গবেষণা, প্রশিক্ষণ এবং স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নত করা। বিএমইউ শিক্ষক, রেসিডেন্ট ও কর্মীদের মধ্যে উদ্ভাবন, ধারণা এবং অন্তর্দৃষ্টি বিকাশের সুযোগ তৈরি করছে। শিক্ষার্থীরা পেশাগত দক্ষতা, জ্ঞান, সহানুভূতি এবং সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনাসহ প্রস্তুত হয় সেই কাজটি করে যাচ্ছে। যাতে শিক্ষার্থীরা সক্রিয় সমাজসেবায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাদের সহানুভূতি ও সামাজিক দায়িত্ববোধ বৃদ্ধি করতে পারে। এছাড়াও শিক্ষার্থীরা তাদের অর্জিত জ্ঞান বাস্তব জীবনের স্বাস্থ্যসেবা পরিস্থিতিতে কীভাবে প্রয়োগ করতে হয় তা শিখতে পারে বিএমইউ থেকে। বিএমইউ বিভিন্ন আকর্ষণীয় কোর্স অফার করে যা পেশাগত উন্নয়ন এবং কর্মজীবনে অগ্রগতি প্রদান করে ।
অধ্যাপক ডা. মোঃ শাহিনুল আলম বলেন, বিএমইউ এর ওপিডি বা বহির্বিভাগ সেবা ও উদ্দেশ্য হলো ওপিডি হাসপাতালের রোগীদের জন্য প্রথম ও গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগের কেন্দ্র। এটি অ-জরুরি চিকিৎসা সেবা, রোগ নির্ণয়, ছোট সার্জারি এবং পুনর্বাসন প্রদান করে । ওপিডি-এর প্রধান উদ্দেশ্য হলো রোগী-কেন্দ্রিক, সময়োপযোগী এবং দক্ষ চিকিৎসা নিশ্চিত করা। এটি হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে মসৃণ ও সুসংগঠিত রাখতেও সহায়তা করে। ওপিডি সেবার মান উন্নয়নের প্রধান উদ্দেশ্যগুলির মধ্যে রয়েছে চিকিৎসক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের মধ্যে দলগত কাজকে শক্তিশালী করা এবং প্রতিটি রোগী যাতে আস্থা ও নিরাপত্তা অনুভব করে তা নিশ্চিত করা ।
অধ্যাপক ডা. মোঃ শাহিনুল আলম এর উপস্থাপনায় জোর দেওয়া হয়েছে যে, রোগীদের সেবা করা কেবল দায়িত্ব নয়, এটি একটি ইবাদত ও সওয়াবের কাজ। মু’জামুল আওসাতে একটি হাদিস অনুসারে, “মানুষের মধ্যে আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বেশি প্রিয় সেই ব্যক্তি, যে মানুষের জন্য সবচেয়ে উপকারী”। তাই, কাজের মূল লক্ষ্য হবে মানুষের উপকারে আসা ।
চিকিৎসেবায় নিয়োজিত কর্মী ও মেডিকেল অফিসারদের ভূমিকা প্রসঙ্গে অধ্যাপক ডা. আলম উল্লেখ করেন, ওপিডি কর্মীদের ভূমিকা হলো রোগীর সাথে প্রথম যোগাযোগ স্থাপন করা এবং সঠিক নির্দেশনা দিয়ে বিভ্রান্তি কমানো । তাদের শৃঙ্খলা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও সহানুভূতি বজায় রাখা উচিত । মেডিকেল অফিসারদের পেশাদারিত্ব ও সততার মাধ্যমে উদাহরণ সৃষ্টি করতে হবে। তাদের সঠিক রোগ নির্ণয় ও সময়মতো চিকিৎসা প্রদান করা উচিত। এছাড়াও, তারা কর্মীদের নির্দেশনা দিয়ে সেবার কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনা করবেন ।
চ্যালেঞ্জ এবং সমাধান মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর বলেন, ওপিডি-তে রোগীর সংখ্যা বেশি এবং চাপমুক্ত সেবা প্রদানের প্রয়োজনীয়তা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এর সম্ভাব্য সমাধান হিসেবে, চিকিৎসক ও কর্মীদের মধ্যে সমন্বয় ও তথ্যের আদান-প্রদান উন্নত করা , সেবার কার্যকারিতা বাড়াতে প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণের ব্যবহার করা এবং শৃঙ্খলা ও সময়ানুবর্তিতা বজায় রাখা প্রয়োজন। তাঁর উপস্থাপনায় ‘সূরা তাওবা’ এর কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে যে, আল্লাহ মুত্তাকিদের ভালোবাসেন এবং মুত্তাকীর একটি বৈশিষ্ট্য হলো দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করা ।
গুরুত্বপূর্ণ এই মতবিনিময়ে বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মোঃ আবুল কালাম আজাদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মোঃ নজরুল ইসলাম, ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মোঃ আব্দুস শাকুর, পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু নোমান মোহাম্মদ মোছলেহ উদ্দীন, চীফ এস্টেট অফিসার ডা. মোঃ এহতেশামুল হক তুহিন, মাননীয় উপাচার্য মহোদয়ের একান্ত সচিব-১ ডা. মোঃ রুহুল কুদ্দুস বিপ্লব, বায়োকেমিস্ট্রি ও মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. জেবা উন নাহার (ডোনা), অতিরিক্ত পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. হাসনাত আহসান, উপ-পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. মোহাম্মদ আবু নাছের, উপ-পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. শরীফ মোঃ আরিফুল হক, মাননীয় উপাচার্য মহোদয়ের একান্ত সচিব-২ উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোঃ লুৎফর রহমান, উপ-পরিচালক (হাসপাতাল) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
তথ্য সহায়তায়: ডা. জেবা উন নাহার (ডোনা)।
সম্পাদনায়: ডা. সাইফুল আজম রঞ্জু। ছবি: মোঃ আরিফ খান। নিউজ: প্রশান্ত মজুমদার।