বিএমইউতে নোসোকোমিয়াল ইনফেকশনস এর প্রবণতা ও প্রতিরোধ কৌশল নিয়ে সেন্ট্রাল সেমিনার অনুষ্ঠিত

বিএমইউতে নোসোকোমিয়াল ইনফেকশনস এর প্রবণতা ও প্রতিরোধ কৌশল নিয়ে সেন্ট্রাল সেমিনার অনুষ্ঠিত

30 Jun, 2025 09:00 AM - 30 Jun, 2025 12:00 PM |


বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে 
নোসোকোমিয়াল ইনফেকশনস এর প্রবণতা ও প্রতিরোধ কৌশল নিয়ে
সেন্ট্রাল সেমিনার অনুষ্ঠিত 

বাংলাদেশ মেডিকেল ইউনিভার্সিটি (বিএমইউ)তে নোসোকোমিয়াল ইনফেকশনস এর বর্তমান প্রবণতা ও প্রতিরোধ কৌশল (Nosocomial Infections at BMU: Current Trends and Preventive strategies) নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ সেন্ট্রাল সেমিনার আজ ৩০ জুন ২০২৫ইং তারিখে এ ব্লক অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মোঃ শাহিনুল আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন সম্মানিত প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. মোঃ আবুল কালাম আজাদ, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোঃ মুজিবুর রহমান হাওলদার, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার, মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোঃ শামীম আহমেদ, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. মোঃ নজরুল ইসলাম। সেন্ট্রাল সেমিনার সাব কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত এই সেমিনারে কমিটির  চেয়ারপারসন অধ্যাপক ডা. আফজালুন নেছা ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন এবং ইন্টারন্যাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. খালেদ মাহবুব মোর্শেদ (মামুন) সঞ্চালনা করেন। 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএমইউ এর মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মোঃ শাহিনুল আলম বলেন, বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ইনফেকশনস কন্ট্রোলের জন্য একটি শক্তিশালী কমিটি করা হয়েছে। ২০২৫-২০২৫ অর্থ বছরের বাজেটে এ জন্য আলাদাভাবে বরাদ্দ রাখা হয়েছে। চিকিৎসা নিতে এসে রোগীরা ইনফেকশনে আক্রান্ত হবে এটা কাম্য নয়। তাই ইনফেকশন প্রতিরোধে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসক, নার্স, টেকনোলজিস্ট, টেকনিশিয়ান, ক্লিনারসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে। বিএমইউর বর্তমান প্রশাসন ইনফেকশন প্রতিরোধে যেকোনো প্রকল্প ও গবেষণাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে। এই সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদানসহ জনসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম নিশ্চিত করবে। ইনফেকশন প্রতিরোধের বিষয়টি কোনোভাবেই অবহেলা করা যাবে না।

সেমিনারে এ্যানেসথেশিয়া, এনালজেশিয়া এ্যান্ড ইনটেসিভ কেয়ার মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. মন্তোষ কুমার মন্ডল জানান,  নোসোকোমিয়াল ইনফেকশনস থেকে রক্ষা পেতে এন্টিবায়োটিকের অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। এন্টিবায়োটিকের অপব্যবহার রোগীর শরীরকে এন্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স করে তোলে ফলে এন্টিবায়োটিক আর কাজ করে না যা রোগীর রোগ আরোগ্যলাভে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। তাই এই বিষয়ে এখনই সর্বোচ্চ মাত্রায় সবাইকে সতর্ক হতে হবে। 

সেমিনারে মাইক্রোবায়োলজি এন্ড ইমিউনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহেদা আনোয়ার স্বাস্থ্যসেবা সম্পর্কিত সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন প্রতিরোধমূলক দিক বর্ণনা করেছেন। তিনি সংক্রমণ প্রতিরোধ এবং নীতির কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, বিশেষ করে নবগঠিত আইপিসি টিমের আইপিসি নীতি প্রণয়ন এবং পদ্ধতির উন্নয়নের উপর আলোকপাত করেছেন। তিনি হ্যান্ড হাইজিন এবং পিপিইর সহজ সরবরাহ, ইনস্টিটিউটের সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, স্টেরিলাইজেশন পদ্ধতি, এনভায়রনমেন্টাল সার্ভেইলেন্স এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল স্টুয়ার্ডশিপ প্রোগ্রামের উপর আলোচনা করেন। তিনি হাসপাতালে কর্মরত স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের ক্রমাগত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচি এবং তাদের টিকাদানের ব্যবস্থা জোরদার করার পরামর্শ দেন। একটি প্রতিষ্ঠানে সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ (আইপিসি) অনুশীলন বাস্তবায়নে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে পারে কিন্তু কার্যকর আইপিসি কমিটি, নীতি নির্ধারণ ও দক্ষতার সাথে এই বাধাগুলো অতিক্রম করা সম্ভব। তিনি এর কার্যকর বাস্তবায়নের জন্য আইপিসি সম্পর্কে অধিকতর গবেষণার উপর জোর  দেন।       
উল্লেখ্য, নোসোকোমিয়াল ইনফেকশনস হলো এমন সংক্রমণ যা রোগী হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর, এমনকি ছাড়পত্র পাওয়ার পরও হতে পারে এবং এটা রোগীর মূল অসুস্থতার সাথে সম্পর্কিত নয়। 
 
সম্পাদনায় ডা. সাইফুল আজম রঞ্জু। ছবি: আকাশ। নিউজ: প্রশান্ত মজুমদার।